alexa

Carrer tips

খন্দকার শফিকুল হাসান উজ্জ্বল,

কেমন হবে আপনার ফেসবুক প্রোফাইল ও টাইমলাইন

কেমন হবে আপনার ফেসবুক প্রোফাইল ও টাইমলাইন
How to use social media

বর্তমান ইন্টারনেট ও টেলিকউনিকেশন বিপ্লবের যুগে ফেসবুক সবার কাছেই অতি সুপরিচিত একটি নাম। বর্তমানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ কমিউনিটি হচ্ছে এই ফেসবুক।
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেকে এগিয়ে রাখতে চাইলে ফেসবুকের সঠিক ব্যবহার জানার কোনো বিকল্প নেই বলে আমি মনে করি। কিন্তু আমার দেখা মতে আমাদের দেশে যে সমস্যাটি প্রকট আকারে দেখা যায়, তা হলো সঠিক ব্যবহারবিধি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ধারণার অভাব যার ফলে কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারী ফেসবুক ব্যবহার করে তার সুরুচির চেয়ে কুরুচিপসম্পন্ন স্বভাবের পরিচয় বেশি দিয়ে ফেলেন।

এক্ষেত্রে আমার কয়েকটি সাধারন পরামর্শ:
আপনি কাউকে রিকোয়েস্ট পাঠালে তখন অবশ্যই তার সামনে ব্যাক্তি আপনি যান না, যায় আপনার প্রোফাইল পিকচার ও নাম সম্বলিত একটা প্রোফাইল, যা প্রথম দর্শনেই আপনার এডুকেশনাল ব্যাকগ্রাউন্ড, আপনার মানুষিকতা ও আপনার রুচির সম্পর্কে একটা মোটামুটি ধারনা দিয়ে দেয়।

মানুষ সবার আগে যে জিনিসটি লক্ষ্য করবে তা হচ্ছে আপনার নাম। একটি ভুল অনেকের প্রোফাইলেই দেখা যায় তা হলো নাম ঠিকমতো না লেখা। যেমন কারো নাম যদি লেখা হয় Hafizur Rahman Mamun এভাবে পড়তে কিন্তু সহজ হচ্ছে । কিন্তু যদি লিখেন Mamun Rahman Hafizur কিংবা Rocking Boy Mamun তাহলে এটা নাম এর বিভ্রান্তি যেমন তৈরি করে তেমনি আপনার রুচিকেও ফুটিয়ে তুলে। সূক্ষ্ম এই বিষয়টি অনেকে এড়িয়ে যান, কিন্তু এটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমেই আপনার যোগাযোগ দক্ষতা, অর্গানাইজেশন, পেশাদারিতা ও এডুকেশনাল ব্যাকগ্রাউন্ড ইত্যাদি সম্পর্কে মানুষের একটা ধারণা গড়ে উঠে। তাছাড়াও অনেকে আজে বাজে নাম ব্যবহার করে, কেউ লেখে - হিটলার রুবেল, কেউ লেখে - কষ্টে ভরা জীবন আমার, সীমাহীন ভালোবাসা, নীল আকাশের তারা ইত্যাদি ইত্যাদি। এই ধরনের আইডি থেকে রিকোয়েস্ট আসলে গ্রহন তো দূরের কথা স্টান্ডার্ড কমিউনিটি কিন্তু আপনাকে ব্লকও মারে যা আপনি জানেন না বা বুঝেন না।

পারলে প্রোফাইলে নিজের রিসেন্ট একটি ছবি দিন, পূর্ণ ঠিকানা,স্কুল, কলেজ, কর্মমজীবনের ডিটেইলস বায়োতে যোগ করুন, নামটি বাঙ্গালী হিসেবে অবশ্যই বাংলায় লিখুন (অপশনালের ঘরে ইংলিশ ব্যবহার করুন) এবং কখনই Worked at Facebook বা worked at বাপের হোটেল দিবেন না। 

প্রোফাইলে মাঝে মধ্যে আপনার বিভিন্ন গঠনমূলক শখের কথা লিখতে পারেন। যারা আপনার প্রোফাইল পড়ছে তাদের অনেকের সাথেই আপনার শখ মিলে যেতে পারে, সেখান থেকে আপনার সাথে পরিচয়ের আগ্রহও তৈরি হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভালো লেখক, সাহিত্যিক, ভালো প্রফেশনালদেরকে অর্থাৎ যাদের থেকে শেখার কিছু আছে তাদেরকে রিকোয়েস্ট পাঠান অথবা তাদের ফলোয়ার হোন। তাহলে মনোরঞ্জনকারী বিভিন্ন ছবি না দেখে গুণীজনের কাছ থেকে কিছু শিখতেও পারবেন। তবে লাইক, কমেন্ট, ও শেয়ারের ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকবেন, কারন আপনার করা লাইক, কমেন্ট, ও শেয়ার আপনার সকল বন্ধুই দেখতে পারে। সুতরাং 69, nc, R8, হট, এবং ইমু নাম্বারের ব্যাপারে খুব সাবধান। মান সম্মান যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। পরে আম এবং ছালা দুই ই যাবে। অফিসের সহকর্মীরা আপনাকে দেখে মিটমিট করে হাসবে আর আপনি শুধু তাকিয়ে থাকবেন।

ফেসবুককে শুধু আনন্দ খোঁজার মাধ্যম হিসেবে না দেখে মানুষের সাথে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলায় মনোযোগী হন, এর সুদূরপ্রসারী উপকার পাবেন।

নিয়মিত বিভিন্ন কনটেন্ট শেয়ার করুন। এছাড়াও বিভিন্ন গ্রুপে আপনার আর্টিকেল পোস্ট করুন।
এতে করে আপনার নেটওয়ার্ক যেমন বড় হবে, তেমনি মানুষ আপনার সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে উঠবে।

কানেকশন তৈরি অনেক বড় একটি দক্ষতা। ফেসবুকে অনেকেই আছেন একদম কাছের মানুষ ছাড়া কাউকে ফ্রেন্ডলিস্টে রাখেন না। কিন্তু বর্তমানে ফেসবুক পরিবারের গন্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে সেটাও মনে রাখবেন।

ফেসবুকে ছবিটি কেমন হবে? ছবির গুরুত্ব সম্পর্কে অনেকেই ওয়াকিবহাল নন, অথচ ছবি দেখেই আপনার সম্পর্কে মানুষের মনে প্রাথমিক ধারণা জন্মাবে। সুতরাং এমন কোনো ছবি দিবেননা যাতে আপনার রুচির ব্যাপারে মানুষের মনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়।

কভার ফটোতে এমন ছবি রাখার চেষ্টা করুন যেটি দেখে মানুষ আপনার সম্পর্কে পজিটিভ একটি ধারণা পাবে। 

সবশেষে নজর দিন আপনার প্রোফাইল কতটা নান্দনিক তার উপর। সর্বোপরি বানানের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখুন। প্রোফাইলটি পড়তে এবং দেখতে ভালো লাগছে কিনা কিংবা বানান বা ব্যাকরণ ইত্যাদি ঠিক আছে কিনা যাচাই করে দেখুন, দীর্ঘ এবং কঠিন বাক্য এড়িয়ে চলুন। আপনার ফ্রেন্ডগুলোকে যাচাই বাছাই করে এ্যাড করুন- জানেন তো আপনার ভুল করে বা সাময়িক মনোরঞ্জনের আসায় করা অচেনা বাজে ছবি দিয়ে প্রোফাইল বানানো বন্ধুদের আপনার স্যারের প্রোফাইলে "পিপল ইউ মে নো" অপশনে দেখায়?? সুতরাং সাধু আগেই হয়ে যান সাবধান ||

খন্দকার শফিকুল হাসান উজ্জ্বল

সেলস প্রোফেশনাল

[email protected]