alexa

Carrer tips

রেজুয়ার রহমান,

জীবনের প্রথম চাকরিতে যে ১০ টি ভুল আপনি করছেন

জীবনের প্রথম চাকরিতে যে ১০ টি ভুল আপনি করছেন
10 mistakes in first job

জীবনের প্রথম চাকরিতে যে ১০ টি ভুল আপনি করছেন

১। আপনি প্রশ্ন করছেন না।

আপনাকে সবাই মূর্খ ভাববে বলে আপনি প্রশ্ন করছেন না। এটি একটি বিশাল ভুল। আপনার জানা উচিৎ অফিসের সব চাইতে অভিজ্ঞ লোকটিও প্রশ্ন করেন যখন তিনি কিছু একটা বুঝতে না পারেন। প্রশ্ন করলে কেউ মূর্খ হয়ে যায় না বরং আত্মবিশ্বাসী ও কৌতূহলী লোকরাই বেশি প্রশ্ন করেন।

২। প্রশ্ন করার সাথে সাথে আপনি আবার ক্ষমা চাচ্ছেন।

অনেকেই প্রশ্ন করার আগেই একবার ক্ষমা চেয়ে নেন “জিজ্ঞেস করছি বলে দুঃখিত, এই কাজটা কিভাবে করা উচিৎ?”। প্রশ্ন করা কোন অপরাধ নয় যে ক্ষমা চাইতে হবে। কোন বিষয় ভাল ভাবে বোঝার জন্য বা পরিস্থিতি নিজের আওতায় আনার জন্য অবশ্যই প্রশ্ন করতে হবে। ক্ষমা না চেয়ে বরং প্রশ্নের উত্তর জানার পর উত্তরদাতাকে ধন্যবাদ দিন “কাজটা শেখানোর জন্য ধন্যবাদ”।

৩। আপনি মনে করছেন আপনি অনেক বেশি প্রশ্ন করেন।

আপনার হয়তো মনে হতে পারে আপনি অনেক বেশি প্রশ্ন করে ফেলছেন। সবাইকেই যেকোন কাজ কোন একদিন প্রথমবার করতে হয়। যেহেতু এটি আপনার প্রথম চাকরি তাই প্রায় সব কাজই আপনার প্রথমবার করতে হচ্ছে। আপনি হয়তো ভাবছেন সবাই আপনার উপর বিরক্ত হচ্ছে। কিন্তু একটি অফিসে সব সময় কেউ না কেউ নতুন থাকে এবং প্রশ্ন শুনে সবাই অভ্যস্ত। তাই প্রয়োজনে অবশ্যই প্রশ্ন করুন। তবে অবশ্যই খেয়াল করতে হবে যাকে প্রশ্ন করছেন সে উত্তর দেয়ার জন্য প্রস্তুত কিনা।

৪। আপনি সবাইকে মেইল করছেন।

আপনি হয়তো আপনার ইমেইলের TO এবং CC তে সবার নাম এন্ট্রি করে দিচ্ছেন। ইমেইল করার আগে আপনাকে TO এবং CC এর ব্যবহার জানতে হবে। আপনি যাদের কাছে থেকে আপনার ইমেইলের জবাব আশা করছেন তাদেরকে রাখবেন TO তে। আর যাদেরকে আপনার ইমেইলটি সম্পর্কে অবগত রাখতে চাচ্ছেন কিন্তু তাদের থেকে কোন জবাব আশা করছেন না তাদেরকে CC তে রাখবেন। এর বাইরে কাউকে ইমেইলে অন্তর্ভুক্ত করার দরকার নেই।

৫। কখনই ইমেইলের জবাব এক শব্দে দিবেন না।

প্রথমে যেটি আপনাকে জানতে হবে সেটি হচ্ছে সব ইমেইলের উত্তর দেয়ার দরকার নেই। অনেক ইমেইল অফিসের সবার অবগতির জন্য পাঠানো হয়। সেসব মেইলের উত্তর দেয়া জরুরী কিছু না। যদি আপনি ইমেইলের TO তে থাকেন তবে অবশ্যই আপনার জবাব দেয়া উচিৎ এবং জবাব কখনই ফেসবুক চ্যাটের মত করে এক শব্দে যেমনঃ Thanks বা সংক্ষিপ্ত রূপে যেমনঃ TNX এমন করে দিবেন না। ইমেইলের জবাব অবশ্যই সঠিক এড্রেসিং, হেডিং, সিগনেচার সহ দেয়া উচিৎ। আর সেন্ড বাটনে ক্লিক করার আগে অন্তত ২ বার ইমেইলটি নিজে পড়ে শুধরে নিন।

৬। আপনি মানুষের নাম ভুলে যান।

আপনি নতুন হিসেবে হয়তো সবার নাম মনে রাখতে পারবেন না। এটা স্বাভাবিক তবে যত দ্রুত সম্ভব অফিসের মুখগুলোকে মুখস্ত করে ফেলুন কেননা কেউই নিজেকে ভুল নামে ডাকা পছন্দ করেন না সে যত নিম্নপদস্থ লোক হন না কেন। আর সবার সাথে স্বাভাবিক একটি সম্পর্ক বজায় রাখুন। কারো সাথে যদি আপনার কোন কাজ নাও থাকে তবুও দিনে একবার কথা বলুন। এতে আপনার অফিসের দৈনন্দিন কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে।

৭। আপনি যতটুকু কাজ পারেন তার থেকে বেশি পারার ভান করছেন।

কোন কাজ না পেরে কখনই বলবেন না আপনি পারেন। এতে আপনার বিপদ বাড়বে। না পারলে সততার সাথে বলুন আপনি পারেন না বা ঊর্ধ্বতন কাওকে শিখিয়ে দিতে বলুন।

৮। ছোট ছোট কাজ গুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না।

অনেকেই কোন প্রোজেক্টের ছোট ছোট কাজ গুলোকে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এটা সব সময় মাথায় রাখা উচিৎ এক বালতি দুধ নষ্ট করে দেবার জন্য ১ ফোঁটা তেঁতুলই যথেষ্ট। প্রোজেক্টের সকল কাজকে গুরুত্বের সাথে দেখুন এবং সব চাইতে ছোট কাজটিও সমান মনোযোগের সাথে সম্পন্ন করুন। হয়তো এই ছোট কাজটির জন্যই আপনার পুরো প্রজেক্ট ধূলিসাৎ হয়ে যেতে পারে।

৯। যখন আপনাকে অতিরিক্ত কাজ দেয়া হচ্ছে আপনি প্রতিবাদ করছেন না।

যেকোনো চাকরিতেই আপনার প্রথম দায়িত্ব হল নিজের কাজ বুঝে নেয়া। কখনই এমন কাজ করা উচিৎ নয় যেটি আপনার দায়িত্বের মধ্যে পরে না। কাউকে সাহায্য করার জন্য হলে ভিন্ন কথা তবে যেসব কাজ আপনার দায়িত্বের মধ্যে পরে না সেসব কাজ কখনই দায়িত্ব হিসেবে করবেন না। আর যদি আপনার দায়িত্বের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন ও প্রচুর পরিমাণে কাজ থাকে যা করতে আপনি হিমশিম খাচ্ছেন তাহলে আপনার ঊর্ধ্বতনের কাছে থেকে জেনে নিন কোন কাজটি আগে আর কোন কাজটি পরে করতে হবে। কাজের চাপ বেশি থাকলে অবশ্যই গুরুত্বের ভিত্তিতে কাজ করুন, সব কাজ একসাথে করা কারো পক্ষে সম্ভব না।

১০। ভুল হলে স্বীকার করছেন না।

কাজ করতে গেলে ভুল হতেই পারে। ভুল কখনো অস্বীকার করবেন না বা অন্য কারো ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করবেন না। নিজের ভুল স্বীকার করে নিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিন ও আবার যেন সে ভুল না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।