alexa

Carrer tips

সাখাওয়াত হোসেন,

ওয়ার্ক ফ্রম হোম এ সফল হবার ১০ উপায়

ওয়ার্ক ফ্রম হোম এ সফল হবার ১০ উপায়
Ten way to succeed to work from home

একটি ডিজিটাল যুগের সুফল এবং সেই সাথে মহামারী করোনার কারনে অনেক সংস্থাকে তার কর্মীদের জন্য ঘরে বসে কাজ করতে উৎসাহিত করেছে এবং করছে। প্রাথমিকভাবে এটি আনন্দের মতো মনে হতে পারে যেমন আপনি আপনার প্রতিদিনের অফিস যাতায়াত এড়াতে পারছেন কিংবা অতিরিক্ত সময়ের জন্য আপনার অ্যালার্মটি বন্ধ করে ঘুমাতে পারছেন, যদিও নিকট ভবিষ্যতে এর কিছু ত্রুটি আপনার জন্য বয়ে নিয়ে আসতে পারে। আপনার কর্মকান্ডের নতুন সেটআপটি থেকে সর্বাধিক সুফল লাভ করতে এবং সেই ব্যাপারে আপনাকে সহায়তা করার জন্য, এর সাথে বাড়ি থেকে কাজ করার সময় আপনি সেরা ফলাফল পাচ্ছেন তা নিশ্চিত করার জন্য আমি ১০ টি সেরা টিপসের ব্যাপারে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো।

সর্ব প্রথমে নিজের জন্য কিছু করুন

আপনি চাইলেই বিছানা থেকে বের হওয়া এবং আপনার অফিসিয়াল কাপড় পরা ছাড়াই সহজেই আপনার ল্যাপটপে কাজ শুরু করা সহজ। তবে নিজেকে অনুপ্রাণিত রাখতে সহায়তা করার জন্য, সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের জন্য কিছু কাজ করা ভাল। সারাদিনের জন্য নিজেকে কাজে আটকে যাওয়ার আগে আপনি ঘরেই কোনো ব্যায়াম করতে পারেন, অথবা সকালের খবরের পাতায় চোখ বোলাতে পারেন বা আপনার প্রিয় বইয়ের একটি অধ্যায় পড়তে পারেন।

নিদির্ষ্ট কর্মক্ষেত্র তৈরী করুন

একটি নির্দিষ্ট কাজের ক্ষেত্রে থাকতে ও আপনাকে কাজে মনোনিবেশ করতে এবং আরও কর্মক্ষম থাকতে একটি নির্ধারিত কর্মক্ষেত্র অনেক সাহায্য করতে পারে। আপনার যদি ইতিমধ্যে কোনও হোম অফিস বা ডেস্ক থাকে তবে তা আপনার জন্য সহায়ক কিন্তু আপনার যদি তা না থাকে তবে আপনাকে তা তৈরী করে নিতে হবে। আপনি আপনার ওয়ার্কস্টেশনটি ডাইনিং টেবিলে বা ড্রয়িং রুমের টেবিলে সেট আপ করতে পারেন বা আপনি চাইলে আপনার কম্পিউটার টেবিলটিকে আপনার নতুন অফিস ডেস্কে পরিণত করতে পারেন।

কাজের অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি করুন

আপনাকে কাজে মনোনিবেশ করতে এবং সত্যিকার অর্থে কাজ শেষ করতে সহায়তা করার জন্য আপনি আপনার কাজের অগ্রাধিকারের একটি তালিকা তৈরী করুন। আপনি আপনার তালিকা থেকে ঘরের কাজগুলি করার পরিবর্তে অফিসের কাজগুলি এগিয়ে রাখুন এবং সেই কাজ শেষ হলে টিক দিয়ে অফিসের পরবর্তী কাজের প্রতি মনোনিবেশ করবেন এবং দেখবেন একবার কাজটি সম্পন্ন করার পরে আপনি নিজ থেকেই অর্জনের অনুভূতি বোধ করবেন।

সহকর্মীদের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ

আপনার সহযোগীদের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগের একটি ওপেন অনলাইন গ্রুপ তৈরি করে রাখুন যার ফলে আপনি ও আপনার সহকর্মীর মধ্যে সহজ অফিসিয়াল কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়। যার ফলে আপনি চাইলেই আপনার ম্যানেজারের সাথে চেক করে, আপনি কী কাজ করছেন সেগুলির আপডেট তাকে জানাতে পারবেন এবং আপনার সহকর্মীরাও কি কি কাজ করছে সেই ব্যাপারে আপনিও আপডেট থাকতে পারবেন। এর মাধ্যমে আপনি ঘরে থেকেও অফিসের কাজের পরিবেশ পাবেন এবং আপনার ম্যানেজার বা সহকর্মীকেও আপনি অফিসের কাজের স্বাচ্ছন্দ্য দিতে পারবেন যেমনট আপনি অফিসে করে থাকেন।

একসময়ে একাধিক কাজকে না বলুন

একসময়ে একাধিক কাজ করা থেকে বিরত থাকুন নাহলে তা আপনার অফিসের কাজের ফলাফলে বিঘ্ন ঘটাবে। আপনি ভাবতে পারেন যে অফিসের কাজের ফাকে ফাকে আপনি চাইলে ঘরের কোনো কাজ অথবা বিনোদনমূলক কোনো কাজ করতে পারছেন, তবে নিজেকে বোকা বানাবেন না! কারন এতে অবশেষে আপনার অফিসের কাজের গুনাগুনাকেই ব্যাহত করবে। একবারে একটি কাজে মনোনিবেশ করুন, নিজেকে সেই কাজের জন্য একটি সময়সীমা দিন এবং আপনি পরবর্তী কাজটিতে যাওয়ার আগে সেই সময়সীমার মধ্যে আপনার বর্তমান কাজটি সম্পূর্ণ করুন।

বিভ্রান্তি এড়িয়ে চলুন

একটিবার চিন্তা করে দেখুন আপনি যখন অফিসে কাজ করেন তখন আপনি একাগ্রচিত্তে কাজটি সম্পূর্ন করতে পারেন। কিন্তু এখন যেহেতু ঘরেই আছেন তবেই সেই মনোনিবেশ করতে আপনার খানিকটা কষ্ট হবে যার ফলে আপনার অফিসের কাজ ব্যাহত হবে। তাই মনোযোগ নষ্ট করতে পারে এমন উপাদান থেকে অফিসের কাজ করার সময় নিজেকে যতটুকু সম্ভব দূরে রাখুন যেমন আপনার ডিভাইসগুলি চালু করার প্রলোভনটি দূর করতে আপনার ফোনটি এয়ারপ্লেন মোডে রাখুন এবং আপনার টিভি রিমোটটি কোনো অপরিচিত জায়গায় লুকিয়ে রাখুন, তবেই দেখবেন আপনি মন দিয়ে অফিসের কাজে মনোযোগ দিতে পারবেন।

চোখের ক্ষুধাকে না বলুন

যেহেতু ঘরেই আছেন এবং চাইলেই শুধুমাত্র চোখের ক্ষুধা মিটানোর জন্য আপনি অফিসের কাজের মাঝখানে ফ্রিজ খুলে অহেতুক কোনো অপুষ্টিকর খাবার খেয়ে নিচ্ছেন যাতে রয়েছে অপ্রয়োজনীয় ক্যালোরিগুলি; যা আপনাকে ঝিমঝিম এবং কম শক্তিশালী বোধ করাতে পারে। আর যদি আপনি ক্ষুধার্ত থাকেন তবে স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন গাজর-শশা বা কোনো ফল বেছে নিন যা আপনাকে কাজে শক্তি প্রদান করবে।

মধ্যাহ্নভোজনের বিরতি

আপনি অফিসে বা বাড়িতে যেখানেই থাকুন না কেন, দিনের একটা নিদির্ষ্ট সময়ে মধ্যাহ্নভোজনের বিরতি নিন যা আপনাকে দিনের বাকী সময়টুকুতে শক্তি যোগাতে সহায়তা করবে। যখন অফিসের থাকেন তখন এই মধ্যাহ্নভোজনের বিরতি যতটা সহজভাবে নেয়া যায় তবে আপনি যখন বাড়িতে সীমাবদ্ধ থাকেন তখন এটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পরে যে আপনি এই বিরতিটি নিচ্ছেন কিনা। এই বিরতি আপনার ল্যাপটপ থেকে অন্তত ত্রিশ মিনিট দূরে থাকা আপনাকে শান্ত করতে এবং কাজে পুনরায় মনোনিবেশ করতে সহায়তা করবে।

সহকর্মীর প্রতি সহায়তা

আপনি যদি ঘরে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে অনলাইন বিষয়ক কাজে দক্ষ হয়ে থাকেন তবে আপনার উচিত আপনার কোনো সহকর্মী যদি এই বিষয়ে অদক্ষ হয়ে থাকে তাহলে তাকে পর্যাপ্ত পরিমানে শিখিয়ে দেয়া এবং তাকে প্রতিনিয়ত সহায়তা করা। এতে যেমন আপনার সাথে আপনার সহকর্মীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হবে এবং আপনার কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে। প্রতিদিন তাদের সাথে চ্যাট করুন এবং দেখুন যে কোনও কার্যক্রমে তাদের কোনও সহায়তার দরকার আছে - ঠিক যেমন আপনি অফিসে থেকে করতেন। এছাড়াও, কাজের সময় আপনি অফিসের সাথে কোন যোগাযোগ পদ্ধতির মাধ্যমে আপনি কানেক্টেড রয়েছেন তা নিশ্চিত করতে পারবেন।

পর্যাপ্ত পরিমান ঘুম

হোম অফিস করার কারনে যেহেতু আপনাকে খুব ভোরে উঠতে হচ্ছে না কিংবা বাসের লম্বা লাইন ধরতে হচ্ছে না সেই ক্ষেত্রে আপনি কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম পাবার কথা তবে বাস্তবে দেখা যায় অফিসে না যাওয়ার ফলে অধিকাংশ মানুষ রাতভর হয়তো মুভি কিংবা ফুটবল ম্যাচ দেখে সময় পার করছেন যা আপনি নিজের পক্ষে কোনও উপকার করছেন না! বাসায় থেকে কর্মক্ষম থাকতে, আপনার এখনও পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম লাগবে। সুতরাং, আপনার সাধারণ ঘুম দেয়ার সময় রুটিন অনুসরণ করুন এবং প্রস্তাবিত পরিমাণ ঘুম দিন ,যা আপনাকে পরদিন নতুন উদ্যমে কাজ করতে সহায়ক হবে।

আমি আশা করি উপরোক্ত অভ্যাস গুলো মেনে চললে আপনি বাসায় থেকে কর্মক্ষম হওয়ার সর্বোত্তম উপায়ে লাভবান হবেন এবং আপনি প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন যে ঘরে থেকে কাজ করা আসলেই সবার জন্য উপকারী।